ড. মাহফুজ পারভেজঃ হুমায়ূনের বইয়ের প্রেক্ষাপটে হিমুর হলুদ পাঞ্জাব।
আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে আকাশের দুয়ার খোলা। বিষন্ন মেঘ ভেঙে ঝরছে অশ্রুবিন্দুর মতো বৃষ্টির একেকটি ফোটা। আজ নাদিমউল্লাহর মন ভালো নেই। আজ ১৯ জুলাই নন্দিত কথাসাহিত্যিক, হিমুর স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী। পাঁচ বছর আগে এই দিনে তিনি দূর প্রবাসের নিঃসঙ্গ পরিবেশে চির বিদায়ের পথে চলে গিয়েছিলেন।
নাদিম দিনটির কথা মোটেও ভুলতে পারে নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্র নাদিমের গ্রামের বাড়িও ঘটনাক্রমে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায়। ‘স্যার’ এর কথা খুব মনে পড়ে। কত স্মৃতি জমা আছে! তাঁর প্রতিটি বই আমার পড়া। প্রতিটি চরিত্র আমার খুবই চেনা, খুবই আপন’- বিষাদকণ্ঠে বলে নাদিম।
আবেগ ধরে রাখতে পারছিল না সে। ‘সারা রাত স্যারের বইগুলোকে আগলে ছিলাম। হিমুর প্রিয় হলুদ পাঞ্জাবিতে আবৃত করেছি সব।’
নাদিমের হাতে শোক ও স্মরণ প্রতীকী ব্যঞ্জনায় মূর্ত হয়েছে চমৎকারভাবে। হুমায়ূনের বইগুলোর প্রেক্ষাপটে হিমুর হলুদ পাঞ্জাবি বিছিয়ে নাদিম তৈরি করেছে হুমায়ূনময় আবহ। সে আবহ থেকে বিচ্ছুরিত হচ্ছে বেদনার সুর।
ফেসবুকে নিজের সাজানো শৈল্পিক ছবিটি আপলোড করে নাদিম লিখেছে, প্রিয় হুমায়ূন স্যারের জন্য শোকগাথা। বন্ধুরা সেখানে জানাচ্ছে নিজস্ব অভিব্যক্তি। খুব নিকটজনেরা সামনা-সামনি নাদিমের শোকার্ত প্রতীক দেখতে চলে আসে সরাসরি তার কাছে।
‘আজ দেখুন কেমন বৃষ্টি হচ্ছে! হুমায়ূন স্যারের প্রিয় বৃষ্টি তাঁর বিদায় দিনে আকাশ ছেড়ে চলে এসেছে সমগ্র পৃথিবীতে।’ বিড়বিড় করে বলে নাদিম, ‘আজ আমিও তুমুল ভিজবো শ্রাবণের বৃষ্টিতে। হিমু হয়ে হেঁটে যাবো পাহাড়-অরণ্যের পথ ধরে।’
নাদিমের হাতে ছিল তখন হুমায়ূন আহমদের লেখা একটি উপন্যাস। নাম ‘তোমাদের জন্য ভালোবাসা’।
কে জানে, হয়ত একালের হিমুর পথ ধরে পাশে পাশে হেঁটে যাবে হুমায়ূনের নায়িকার মতো কোনো এক তরুণী। পৃথিবীর মানুষ সেই অলৌকিক দৃশ্য দেখতে পাবে না।